মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন হাটে-বাজারে সম্প্রতি সময়ে চোরাইপথে আসা মোবাইল সেটের রমরমা বানিজ্য চলছে বলে এক অনুসন্ধানে জানা গেছে। চোরাই পথে আসা বিভিন্ন কোম্পানীর মোবাইল সেট বিক্রি হওয়ায় সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। আর অবৈধভাবে মোবাইল সেট ক্রয় করে ঠকছেন ক্রেতারাও। চোরাইপথে আসা এসব মোবাইল সেট বিক্রি করে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা ঝুঁকিও বাড়ছে।
এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই, সৌদি আরব এবং ভারতসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে চোরাই পথে বিভিন্ন কৌশলে সংঘবদ্ধ চোরা-কারবারীরা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ উপায়ে মোবাইল ফোন সেট নিয়ে এসে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সিন্ডিকেটে কাছে বিক্রি করে। এরপর ওই সিন্ডিকেট থেকে দেশের বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারী মোবাইল ফোন সেট ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে অবৈধপথে আসা এসব মোবাইল ফোন সেট।
এরই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার আনাচে কানাচে এখন চোরাই পথে আসা এসব মোবাইল ফোন সেট বিক্রি করছে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী। চোরাই পথে আসা বিভিন্ন কোম্পানীর দামি ব্রান্ডের মোবাইল সেট পেকুয়ার বিভিন্ন এলাকার অসাধু ব্যবসায়ীরা এনে আএমআই নম্বরও বিশেষ সফওয়ারের মাধ্যমে পরিবর্তন করে ফেলে। এসব সেট বিভিন্ন হাটে বাজারের মোবাইলের দোকানগুলোতে নতুন মোড়কে প্যাকেট ভর্তি করে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব মোবাইল ফোন সেট অর্ধেক দামে বিক্রি করা হয়। পেকুয়ার বিভিন্ন হাট-বাজারের কতিপয় ব্যক্তি চোরাই মোবাইল ফোনের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সখ্যতা গড়ে তুলেছে প্রশাসনের কিছু অসাধু লোক ও বিভিন্ন প্রভাবশালীদের সাথে। ফলে, দিনের পর দিন পেকুয়ার বিভিন্ন হাটে বাজারে চোরাই পথে আসা মোবাইল ফোনের রমরমা বানিজ্য চললেও স্থানীয় প্রশাসন এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
সূত্র আরো জানায়, চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট ও রিয়াজ উদ্দিন বাজার কেন্দ্রীক কিছু মোবাইল চোর চক্রের সাথে কতিপয় মোবাইল ফোন সেট ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় চুরিও হওয়া কিছু মোবাইল ফোন সেটও চোরচক্রের মাধ্যমে পেকুয়া ও বাঁশখালী, কুতুবদিয়া ও চকরিয়ায় এনে বিক্রি করা হয়।
চকরিয়া উপজেলার কোনাখালীতে চোরাই মোবাইল বেচা বিক্রির শক্তিশালীও চক্রও রয়েছে। কোনখালীতে প্রকাশ্যেই চোরাই মোবাইল বিক্রি করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেকুয়ায় চোরাইপথে আসা এসব অবৈধ মোবাইল ফোন সেট বেচা বিক্রি করে হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে একাধিক ব্যক্তি। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি, আয়কর, ভ্যাট ও ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ব্যবসায়ীরা টাকা ও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
এছাড়াও ঢাকা ও চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের সংঘবদ্ধ চোর সিন্ডিকেটের সদস্যদের সাথেও সখ্যতা রয়েছে পেকুয়ার এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীদের সাথে। বিগত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরাই হওয়া বেশ কয়েকটি দামি মোবাইল ফোন সেট পেকুয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এক পদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পেকুয়ায় চোরাই মোবাইল বেচা-কেনার একটি চক্র রয়েছে। এসব চক্রকে সহযোগীতা করেন কিছু প্রভাবশালী। চোরাই মোবাইল বেচা-কেনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দাতা মদতদাতাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। সম্প্রতি সময়ে বেশ কয়েকটি দামি চোরাই মোবাইল ফোন সেটও পেকুয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
কক্সবাজার গোয়েন্দা বিভাগের এক পুলিশ কর্মকার্তা জানান, পেকুয়ার চোরাই মোবাইল সেট ব্যবসার সাথে জড়িতদের খোঁক খবর নেওয়া হচ্ছে।
পাঠকের মতামত: